Monday 30 July 2018

সিসিটিভি ক্যামেরা কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনা করা উচিত

সিসিটিভি ক্যামেরা কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনা করা উচিত

CCTV Camera Price in Bangladesh
CCTV Camera in Bangladesh

সিসিটিভি ক্যামেরা কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে
কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে যা সিসিটিভি ক্যামেরা কেনার সময় বিবেচনা করতে হয়। এক বা একাধিক হার্ডওয়্যার কম্পোনেন্ট আছে যা না জানলেই নয়।

সঠিক লেন্স নির্বাচন করা 
লেন্সের কাজ হচ্ছে সেন্সরের জন্য আলো সংগ্রহ করা। ব্যবহারকারী যা কিছু দেখে বা ডিভিআর এ যা কিছু রেকর্ড হয় সবই লেন্স মারফত হয়। কতটুকু দূরত্বে একটি গাড়ির নাম্বার প্লেট পরা যাবে ও কারও চেহারা চেনা যাবে যা লেন্স নির্ণয় করে কারন লেন্স ফোকাস নিয়ন্ত্রণ করে। অনেক ক্ষেত্রে হায়ার আউটপুট রেজোলিউশানের চেয়ে লেন্স বেশি কার্যকরী কারন আউটপুট সবসময় ইনপুট দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং লেন্স হচ্ছে ইনপুট সিস্টেম। তাছাড়া বাজারে জুম লেন্সও পাওয়া যায়। কিছু কিছু সিসিটিভি ক্যামেরাতে ডিজিটাল জুম এবং বাকিগুলোতে অপটিক্যাল জুম আছে যা লেন্স দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ক্রেতার যথাসম্ভব অপটিক্যাল জুমকে ডিজিটাল জুমের উপর গুরুত্ব দেয়া উচিত। ডিজিটাল জুমের সমস্যা হচ্ছে এটি মূল ইমেজের সাথে কোনও তত্ত্ব যোগ করতে পারেনা। অপটিক্যাল জুম মূল ইমেজের সাথে নতুন তত্ত্ব যোগ করতে পারে কারন লাইট সেন্সরে পৌঁছানোর সাথে সাথে ইমেজ পরিবর্তিত হয়।
Home Security Product in Bangladesh
Home Security Systems in Bangladesh

সঠিক সেন্সর নির্বাচন করা 
সব ধরনের ডিজিটাল সেন্সর এক রকম হয়না। সিসিটিভি ক্যামেরার সেন্সরের স্পেসিফিকেশন যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ২টি জিনিস বিবেচনা করতে হয়, তা হল সেন্সর টাইপ ও সেন্সর সাইজ। বেশিভাগ সেন্সর হয় সিএমওএস নয় সিসিডি। সিএমওএসের কর্মক্ষমতা ও সংবেদনশীলতা দুটোই সিসিডি থেকে অপেক্ষাকৃত কম। যার ফলে এটি পরিষ্কার ইমেজ ধারন করতে পারেনা। তাই পরিচয় শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে সিএমওএস ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে সিএমওএসের সুবিধা হচ্ছে এর মূল্য সিসিডি থেকে কম। পরিষ্কার ইমেজ ধারনের জন্য সিএমওএস ভিত্তিক সেন্সরের অনেক বেশি সিগনাল
প্রসেস করতে হয়। সেন্সরের সাইজ যত বড় হয় ততবেশি লাইট প্রসেস ও উন্নতমানের ইমেজ ধারন করতে পারে। বেশিভাগ সেন্সরের সাইজ ১/৪ ইঞ্চি বা ১/৩ ইঞ্চি হয়ে থাকে। ১/৪ ইঞ্চি দ্বারা ৩.২ বাই ২.৪৪ এমএম এবং ১/৩ ইঞ্চি দ্বারা ৪.৮ বাই ৩.৬ এমএম পরিমাপ করা যায়। বড় সেন্সর শুধু ব্যাপক লাইটই ধারন করেনা, ডিএসপিকে কাজ করার জন্য অতিরিক্ত তথ্য দেয় যা অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতাসম্পন্ন বাজেট ক্যামেরাগুলোর জন্য সহায়ক।
সঠিক আউটপুট রেজোলিউশান নির্বাচন করা 
সিসিটিভি ক্যামেরার একটি প্রচলিত স্পেসিফিকেশন হচ্ছে টিভি রেজোলিউশানের সমতল লাইনের সংখ্যা বা টিভিএল। এর রেঞ্জ ৭০০টিভিএল পর্যন্ত হয়ে থাকে। ৩৮০টিভিএল ও ৫৪০টিভিএলেরও বিভিন্ন ক্যামেরা পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা ৪২০টিভিএলকে সর্বনিম্ন হিসেবে ধরলেও সবক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। আইটপুট নির্ভর করে ইনপুটের উপর। তাই লেন্স এবং সেন্সর যদি আউটপুট রেজোলিউশানের(ডিএসপি দ্বারা নির্ধারিত) সাথে ম্যাচ করতে না পারে তাহলে অতিরিক্ত রেজোলিউশানের পুরোটাই বৃথা যায়। তাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যথেষ্ট পরিমাণ রেজোলিউশান থাকা যা দ্বারা ক্যামেরায় ধারণকৃত ইমেজ স্পষ্টভাবে প্রদর্শন করা যায়।
CCTV Camera Price in Bangladesh

বিভিন্ন ধরনের সিসিটিভি ক্যামেরা
সব সিসিটিভি ক্যামেরার সাইজ ও গঠন এক রকম নয়। প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে ক্যামেরাও বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। নিম্নে ৩ ধরনের ব্যাসিক ক্যামেরার উদাহরণ দেওয়া হল

বুলেট ক্যামেরা 
এই ছোট নলাকার ক্যামেরাগুলো সাধারণত এমন পারিপার্শ্বিক অবস্থায় ব্যবহৃত হয় যেখানে বিচক্ষণতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য একে নিরাপত্তামূলক ডোমে স্থায়ীভাবে ইন্সটলের প্রয়োজন নেই। দোকান ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য এটি উপযুক্ত।
ডোম ক্যামেরা- 
নজরদারির জন্য ডোম ক্যামেরা অসাধারণ। এটি শুধু নৈমিত্তিক ক্ষতি থেকেই ক্যামেরাকে রক্ষা করেনা বরং অতিমাত্রায় নিরাপত্তা প্রদান করে। কারন ক্যামেরাটি কোন দিকে পয়েন্ট করে থাকে তা বোঝা প্রায় অসম্ভব।
আইআর ডে/নাইট ক্যামেরা 
লাইটিং এর অবস্থা যাই থাকুক না কেন, এই ক্যামেরাগুলো ২৪ ঘণ্টা আউটডোর কভারেজ দিয়ে থাকে। এগুলো দিনের বেলা একটি নির্দিষ্ট কালার ইমেজ দিয়ে থাকে এবং রাতে ইনফ্রারেড ভিউ এর জন্য সাদাকালোতে রূপান্তরিত হয়।
ব্যবহারকারীর উদ্দেশ্য ও চাহিদার উপর নির্ভর করে সে কোন ধরনের ক্যামেরা ব্যবহার করবে। চাহিদাগুলো নির্ণয় করতে পারলে ক্যামেরা নির্বাচন করা খুবই সহজ।
Night Vision CCTV Camera in Bangladesh
IP Camera Price in Bangladesh

সঠিক সিসিটিভি ক্যামেরা নির্বাচন করুন
সঠিক ক্যামেরাটি ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রথমেই যা বিবেচনা করতে হবে তা হলো লেন্স। লেন্স ব্যবহারকারীকে স্পষ্ট ইমেজ প্রদান করে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে সেন্সর। ক্রেতার ১/৩ ইঞ্চি সিসিডি সেন্সর ক্রয় করা উচিত কারন এটি প্রসেসিং এর জন্য অধিকাংশ তথ্য ডিএসপিতে প্রদান করে। শেষ ফিচারটি হচ্ছে ক্যামেরা আউটপুট রেজোলিউশান। এর উপযোগিতা প্রথম ২টি ফিচারের উপর নির্ভর করে। হার্ডওয়্যারের সামর্থ্য নির্ণয়ের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্রেতাকে নির্ধারণ করতে হবে কোন ক্যামেরাটি তার চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিস্তৃত আউটডোর এরিয়া কভার করার জন্য যেমন বাড়িওয়ালা তার সম্পত্তি রক্ষার জন্য ডে/নাইট ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারে। স্টাফদের মনিটর করার জন্য বুলেট ক্যামেরা এবং দোকান বা ব্যবসার জন্য ডোম ক্যামেরা ভালো।
সিসিটিভি ক্যামেরার দাম কেমনঃ
ক্যামেরা কোয়ালিটি,প্রোভাইডার ও আনুষঙ্গিক আরো অনেক সমীকরণ মিলিয়ে একটি ভালো সিসিটিভি ক্যামেরার দাম নির্ধারিত হয়। আপনি এখনি কয়েকটা সিসিটিভি ক্যামেরা প্রোভাইডার দের ওয়েবসাইট এ গিয়ে নিজেই এর দাম সম্পর্কে অনুধাবন করতে পারবেন। গুগলে Best CCTV Camera in Bangladesh লিখে সার্চ করুন আর ১০-১২ টা ওয়েবসাইট ঘেটে দেখুন।
Bangladesh Automation Solution
Bangladesh Automation Solution

Wednesday 25 April 2018

গাড়ির নিরাপত্তায় ও নিরাপদে রাখার কিছু কৌশল | Daily Safety Tips


লাখো টাকা খরচ করে শখের গাড়ি কিনেছেনসার্বক্ষনিক একটা বাহন আপনার জন্য স্ট্যান্ডবাই; ভাবতেই হয়ত ভালো লাগছে। নিজের ও পরিবারের যাতায়াত সমস্যারও একটা সমাধান হয়েছেকিন্তু আরেকটা ভাবনা কি বারবার মনে উকিঁ দিচ্ছে না? ঠিক-ই ধরেছেন, আমাদের মত দেশে যেখানে মানুষ হাজার কয়েক টাকা নিয়ে রাস্তায় বেরোতে তিনবার চিন্তা করে, সেখানে আপনার এই দামি জিনিসের নিরাপত্তা কোথায়? ছিচঁকে চোর, সংঘবদ্ধ গাড়ি চোর, গাড়ি ছিনতাইকারীদল দ্বারা সাইড ভিউ মিরর, রেইন শেড, স্টিয়ারিং হুইল, সিডি প্লেয়ার ইত্যাদি সহ বহু পার্টস চুরি, এমনকি পুরো গাড়িটাই লোপাট হওয়ার ঘটনাও তো প্রায়ই ঘটছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গাড়ির ড্রাইভারও এ ধরনের ঘটনায় জড়িত থাকে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তাহলে নিরাপত্তার উপায়?

নিজের গাড়ি নিজেই চালান অথবা অথবা আপনার গাড়ি চালানোর ড্রাইভার আছে, যেটাই হোক না কেন, সতর্ক থাকার জন্য সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললে গাড়ির নিরাপত্তা অনেকাংশে নিশ্চিত করা সম্ভব। কিছু প্রযুক্তি-পণ্যও আপনাকে এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। আমাদের দেশে বোধগম্য কারণে বেশিরভাগ গাড়ি মালিক-ই ব্যক্তিগত ড্রাইভার রাখেন, তাই প্রথমেই আসি এই প্রসঙ্গে।

গাড়ির নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ফার্স্ট ডিফেন্স লাইন হচ্ছে গাড়ির ড্রাইভার। যারা অনেকদিন ধরে ব্যাক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে আসছেন তারা জানেন, ব্যাক্তিগত ড্রাইভার পরিবারের সদস্যদের মতই আপন ও বিশ্বস্ত হয়ে উঠতে পারেন, আবার কিছু ক্ষেত্রে হয়ে উঠতে পারেন “ঘরের শত্রু বিভীষণ”। খারাপ প্রকৃতির লোক সব পেশার মধ্যেই পাওয়া যায়, সুতরাং ড্রাইভারদের মধ্যেও কেউ কেউ বিশ্বস্ততা ভংগ করতে পারেন, যেমন- তেল বা গ্যাসের টাকা চুরি, গ্যারেজ বিল বাড়িয়ে লেখা, এমনকি গাড়ি নিয়ে গায়েবও হয়ে যাতে পারেন। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্যি, গাড়ির মালিকরাও কোন কোন সময় নিজ কর্মদোষে ড্রাইভারদের মধ্যে অবিশ্বস্ততা ও প্রতিহিংসা চাগিয়ে তোলেন।

চালক নিয়োগ দেয়ার আগে তার সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ খবর নিতে হবে তা অনেক পুরোনো কথা। মালিকের বাসাবাড়ির কাছাকাছি এলাকায় অনেকদিন ধরে পরিবার নিয়ে থাকে এই ধরনের ড্রাইভার সাধারণত বড় ধরনের ঘটনা ঘটান না। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি মালিকের সতর্কতা ও তীক্ষদৃষ্টি ড্রাইভারের মনে অপরাধের নিবারক(Deterrent) হিসেবে কাজ করে। তাই, নিয়োগ দেয়ার আগেই চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি ছাড়াও তার নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যের মধ্যে এক/দুজনের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও ছবি নিয়ে রাখবেন এবং এই কাগজগুলো সাবধানে সংরক্ষণ করবেন। ড্রাইভারের ব্যক্তিগত জীবন স্বাভাবিক রাখার জন্য তার বেতন বাস্তবসম্মত ভাবে নির্ধারণ করুন, বেতন তারিখ মোতাবেক নিয়মত পরিশোধ করুন এবং তার ছুটিছাটার দিকে সহানুভূতিশীল নজর রাখুন। তার ভুলের শাস্তি হিসেবে তিরস্কারের পাশাপাশি কোনভাবেই বেতন কেটে নিবেন না , তবে মাঝে-মাঝে বা অতিরিক্ত/গভীর রাত্রিকালীন ডিউটির জন্য যে বকশিস দিতেন তা কমিয়ে দিতে পারেন বা আপাতত বন্ধ রাখতে পারেন। আপনার দামি বাহনটির নিরাপত্তার বিষয়ে তার সংগে আলোচনা করুন, তাকে পরামর্শ দিন এবং আপনি যে ঘটনা ঘটে যাবার আগে যথেষ্ট সাবধানি আর ঘটনা ঘটে গেলে পরবর্তীতে সামাল দেবার জন্য প্রস্তুত আছেন তা ড্রাইভারকে প্রচ্ছন্ন ভাবে বুঝিয়ে দিবেন। 

ড্রাইভারের এবং আপনার গাড়ির গতিবিধি আরো ভালোভাবে নজরে রাখতে গেলে আপনার গাড়িতে জি.পি.এস ট্র্যাকিং সিস্টেম (G.P.S. tracking system) ইন্সটল করে নেয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি গ্রামীন ফোন ও বাংলা লিঙ্ক এবং নাভানা, ফাইন্ডার সহ এই সার্ভিস প্রদানকারী বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আছে। প্রাথমিক ইন্সটলেশন খরচ কোম্পানি ও সার্ভিস ভেদে ৮০০০-১৫০০০ টাকা, পরবর্তীতে মাসিক ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা (বা সমতুল্য বার্ষিক) ফি হিসেবে দিতে হয়। এই ব্যবস্থায় আপনি গাড়ি চলমান নাকি থেমে আছে, চলমান থাকলে গাড়ির তাৎক্ষণিক অবস্থান ও গতি ইত্যাদিসহ আরো অনেক তথ্য  রিয়েল টাইমে (আপনার মোবাইল বা পিসি থেকে গুগল ম্যাপে) অথবা এসএমএস-এর মাধ্যমে জানতে পারবেন। প্রয়োজন ও ইচ্ছা মোতাবেক আপনি আপনার গাড়িতে জিও ফেন্স (Geo Fence) করে রাখতে পারেন, সেক্ষেত্রে, আপনার দ্বারা নির্দিষ্ট করা এলাকার বাইরে গাড়ি গেলে আপনি একটা এলার্ট পাবেন এসএমএস-এর মাধ্যমে। অতিসম্প্রতি জিপিএস ট্র্যাকিং কোম্পানিগুলো জিও ফেন্স ব্যবস্থায় নতুন ফিচার যোগ করেছে, যেটার মাধ্যমে নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে গেলে গাড়ির ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া, আপনি নিজেও যেকোন সময় একটি এসএমএস প্রেরণ করে মূহুর্তেই আপনার গাড়িটিকে থামিয়ে দিতে পারেন।
 
তদুপরি আপনি আপনার গাড়িতে লাগিয়ে নিতে পারেন গোপন স্পাই ক্যামেরা, যা ধারণ করে রাখবে গাড়ির ভেতরের ভিডিও ছবি। গাড়ির চাবির রিং-এ ছোট্ট এই ক্যামেরা বসানো যায়। বাংলাদেশের বাজারে দাম পড়ে মাত্র ৮০০-২৫০০ টাকা। রিয়েল টাইম অডিও শোনা বা গোপনে আপনাকে ছবি পাঠাবে এমন সুবিধা পেতে গেলে অবশ্য গুনতে হবে অনেক বাড়তি পয়সা।

এবারে আসব গাড়ি পার্কিং প্রসংগে। আইনে যাই বলুক, সঠিক স্থানে পার্কিং এর ব্যবস্থা নাই আর থাকলেও অপর্যাপ্ত, তাই বাংলাদেশে শপিং মলের সামনে, বাচ্চার স্কুলের সামনের রাস্তায়, রেস্টুরেন্টের কিংবা অফিসের সামনে গাড়ি আপনাকে রাখতেই হয়। বেশিরভাগ ছিঁচকে চুরি যেমন সাইড মিরর, রেইন শেড, স্টিকার ইত্যাদি খুলে নিয়ে যাওয়া এমনকি আস্ত গাড়ি চুরির ঘটনাগুলো খোলা জায়গায় পার্কিং করা গাড়ির ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে। আপনার যদি ড্রাইভার থাকে, ড্রাইভারের কড়া নজর হয়ত আপনার মূল্যবান গাড়ি এবং এর বহিরাবরণের প্রয়োজনীয় বা সৌন্দর্যবর্ধক অনুষংগগুলোকে বেহাত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবে। সমস্যাটি বড় হয়ে উঠে যদি ড্রাইভার না থাকে। তাই, পার্কিং করার সময় সার্বক্ষণিক সিকিউরিটি গার্ড আছে এমন কোন স্থাপনা যেমন এটিএম বুথ, ব্যাংক, কোন অফিস ইত্যাদির সামনে গাড়ি রাখুন এবং বলাই বাহুল্য, গার্ডকে ১০/১৫ টাকা দিয়ে আপনার গাড়ি একটু দেখে রাখতে অনুরোধ করুন। প্রতিবারে এই টাকাটা খরচ করতে ভালো না লাগলেও গাড়ির যেকোন ছোট-খাট পার্টসেরও যে দাম তা মাথায় রাখলে দেখবেন আখেরে লাভই হয়।

প্রশ্ন করতে পারেন, আপনার ড্রাইভারও নেই, আবার টাকা দিয়ে আপনার গাড়িটিকে কিছুক্ষণের জন্য দেখে রাখতে বলবেন এমন কাউকেও আশেপাশে দেখছেন না, তখন কি করবেন ? আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, জনবহুল স্থানে ছিঁচকে চুরি একটু কমই হয়, কারণ চোর নিশ্চিত থাকে না গাড়ির মালিক বা ড্রাইভার আশেপাশে আছে কিনা, তবে এমন জায়গা থেকেও চোখের পলকে গাড়ি চুরি হয়ে যায়। স্টিয়ারিং লক নামক একটি বিশেষ ব্যবস্থা আপনাকে বাড়তি নিরাপত্তা দিতে পারে। এই লকগুলো ভাঙ্গা একটু কঠিন বিধায় আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন, আর এর দামও বেশ কম। ভাল মানের লকের দাম বাংলাদেশের বাজারে সর্বোচ্চ ২৫০০ টাকা। আধুনিক লকগুলো গাড়ির ইগনিশন ব্যবস্থার সাথে সংযুক্ত থাকে বিধায় তা আরো কার্যকর হলেও বাংলাদেশের বাজারে তা এখনো আমি খুজে পাইনি।


আপনার গাড়িটিতে বেশ কয়েকটি ফিউজ বোর্ড আছে, গাড়ির সামনের বনেট খুলে আপনি ফিউজ বোর্ডগুলো দেখে নিতে পারেন। বোর্ডের কাভারে বা কাভারের পেছন দিকে কোন ফিউজ কিসের জন্য তা পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত থাকে। এখন আপনার কাজ হচ্ছে ইগনিশন, স্টার্টার বা ফুয়েল পাম্পের ফিউজটি খুলে ফেলা। কাজটি খুব সোজা, খালি হাতে টান দিয়েই খুলে ফেলা যায়। এবার ফিউজটি মানিব্যাগে ভরে নিশ্চিতমনে শপিং করে আসুন, চোরের দল ঘাঁটাঘাঁটি করে গাড়ি স্টার্ট না হওয়ার কারণ খুঁজতে যাবে না এক রকম নিশ্চিত।

নিশ্চিত হতে না পারলে, একটি একটি করে ফিউজ খুলে টেস্ট করে দেখুন, কোনটা খুললে আপনার গাড়ি স্টার্ট হয় না। সাবধানে কাজটি করবেন, কারণ এমন হতে পারে আপনি হয়ত কুলিং ফ্যান-এর ফিউজ খুলেছেন, তাতে ইঞ্জিন স্টার্ট হবে, তবে ইঞ্জিনের কুলিং হবে না। আর একটাই সতর্কতা, একটি ফিউজ আরেকটির স্লটে লাগাবেন না, বিপদ ঘটতে পারে।

ইদানিং কালের অনেক গাড়িতে পুশ-স্টার্ট ব্যবস্থা আছে, এই গাড়িগুলোতে স্মা্র্ট-কী থাকে যা গাড়ির খুব কাছাকাছি না থাকলে গাড়ি স্টার্ট হয় না।ফলে স্মার্ট কী একটি নিরাপদ অপশন। স্মার্ট কী-এর কেবিনেটের ভেতরে লুকায়িত অবস্থায় একটি ম্যানুয়েল কী থাকে, যা দিয়ে গাড়ির দরজা খোলা গেলেও সেটা দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করা যায় না। নীচের ছবি দেখে নিন।

পুশ-স্টার্ট অপশন থাকা গাড়ির সঙ্গে স্মার্ট-কী একটি বা ভাগ্য ভালো হলে দুটি আসে। ডুপ্লিকেট স্মার্ট কী-ও তৈরি করা যায়, তবে সেটা বেশ খরচবহুল, আবার সবখানে এটা হয় না। ঢাকার বাংলা মোটর, বিজয়নগর, কাকরাইল এসমস্ত স্থানে ১১৫০০-১২০০০ টাকায় স্পেয়ার স্মার্ট-কী তৈরি করা যায়। গাড়ির শো-রুম গুলোর সাথে যোগাযোগ করলেও তারা আপনাকে এই সংক্রান্ত ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের খবরাখবর দিতে পারবে। মনে রাখবেন, নিরাপত্তার জন্য স্মার্ট-কীর একটার বেশি স্পেয়ার তৈরি করা যায় না, অর্থাত গাড়ির সঙ্গে দুটি স্মার্ট কী আসলে আপনি আর কোন কী বানিয়ে নিতে পারবেন না, তবে একটি আসলে দ্বিতীয় কী তৈরি করে নেয়া যায়। তৃতীয়টা বানালে প্রায়ই প্রথমগুলো অকার্যকর হয়ে যায়। স্মার্ট কী-এর কেবিনেটের ভেতরে লুকায়িত ম্যানুয়েল কী অবশ্য যেকোন সংখ্যক বানিয়ে নেয়া যায় আর এটার খরচও কম, কয়েকশ টাকা মাত্র।

Thanks 


19/1, Tajmahal Road, Mohammadpur,
Dhaka- 1207 | Bangladesh |

Phone : 01919-030679
Email : aamasum@gmail.com,